সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ , ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
হাসপাতাল চালুর দাবিতে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের অনির্দিষ্টকালের ক্লাস বর্জন বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ হাওরে চড়ক উৎসবে মানুষের ঢল ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা, দ্রুত পাকা ধান কাটার আহ্বান বন্যার ঝুঁকিতে হাওরাঞ্চল তিন দপ্তরের ছুটি বাতিল গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় নিহত বেড়ে ৫১ হাজার, নিখোঁজ ১১০০০ ধর্মপাশায় দুই আসামি গ্রেফতার বিএনপি’র ঈদ পুনর্মিলনী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে নববর্ষ উৎসব ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন মে মাসে এই সরকারকে ৫ বছর চাওয়ার কথা আমার নয়, জনগণের : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় পেছালো ১১৮ বার সুনামগঞ্জ শহরের শৃঙ্খলার জন্য অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা নববর্ষের প্রত্যাশা, বিজন সেন রায় বোরো ধান কাটার ধুম, হাওরে বৈশাখী হাসি আমাদের পহেলা বৈশাখ ছাতকসহ দেশের ১০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা বাতিল ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ

জাগো, শোষণ-নির্যাতনের সূতিকাগার গুঁড়িয়ে দাও

  • আপলোড সময় : ২৯-১০-২০২৪ ১২:৩৫:৪৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-১০-২০২৪ ১২:৩৫:৪৮ পূর্বাহ্ন
জাগো, শোষণ-নির্যাতনের সূতিকাগার গুঁড়িয়ে দাও
গণমাধ্যমে অবিরাম একের পর এক ভয়ঙ্কর সব লুটপাটের খবর ছাপছে, একবারেই অবিশ্বাস্য সব খবর। এই গত সোমবার (২৮ অক্টোবর ২০২৪) দৈনিক কালের কণ্ঠের একটি সংবাদশিরোনাম ছিল, ‘শুধু সিঙ্গাপুরই নয়, পাচারের টাকায় বিশ্বের ধনীদের তালিকায় সামিটের আজিজ’। বলা হয়েছে, “ভাই আওয়ামী লীগের দলীয় শীর্ষ ফোরাম প্রেসিডিয়ামের মেম্বার ও প্রভাবশালী মন্ত্রী। বলা যায়, ক্ষমতার একদম শীর্ষবিন্দুতে অবস্থান। বাড়তি পাওনা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ¯েœহ আর আশীর্বাদ। আর এতেই দুই হাতে টাকা কামিয়েছেন গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাহারানো আওয়ামী লীগ সরকারের বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী ফারুক খানের ভাই আজিজ খান। গত ১৫ বছরে এই ক্ষমতার ঢাল ব্যবহার করে তিনি শুধুই তরতর করে ওপরে উঠেছেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ, সরকারি কেনাকাটা, পণ্য ও সেবার সরবরাহ করে সবাইকে পেছনে ফেলে ধনী থেকে আরো ধনী হয়েছেন। বেসরকারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের মালিক মুহাম্মদ আজিজ খানের পরিচিতি এখন শুধু বাংলাদেশের ধনী হিসেবেই নয়; বরং তিনি এখন সিঙ্গাপুরেরও অন্যতম সেরা ধনী ব্যক্তি।” অপরদিকে গত ক’দিন আগে পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে দেশে চরম দারিদ্রের মধ্যে বাস করছেন ৪ কোটির অধিক সংখ্যক মানুষ। রাগে-দুঃখে শরীর-মন অবশ হয়ে যায়, যেখানে হাতপা ছুঁড়ে একটা কীছু বাঁধিয়ে দেওয়ার কথা, যেমন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা সহ্য করতে পারেননি একটা কীছু করেছেন। তবে সেটা যেমন-তেমন একটা কীছু নয়, সেটা ছিল সত্যিকার অর্থেই বৈষম্য¯্রষ্টা ক্ষমতাসীন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান। উপর থেকে নিচের মহল পর্যন্ত যে যেখানে পেরেছে সেখানেই অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে নিজেকে নির্দ্বিধায় জড়িয়ে ফেলেছে। সমাজ নিয়ন্ত্রক রাজনীতিক সমাজের একটি বিশ্বাসঘাতক অংশের সিন্ডিকেট উন্নয়ন কিংবা সেবার নামে তলে তলে চালিয়েছে সম্পদ আহরণের মচ্ছব। নিতান্ত কম সংখ্যায় ক্ষেত্রবিশেষে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে পড়লেও কোথাও কোনও রাষ্ট্র-সরকার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক প্রতিরোধের সম্মুখিন হতে হয়নি দেশের সম্পদ লুটেরাদের, বরং তারা আনুকূল্য লাভ করেছে প্রশাসনের, আইন তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেনি। প্রকারান্তরে তারা প্রশাসনের পতাকার তলে বসেই ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করেই লুটপাটের কারবার করেছে, নির্বিঘেœ সম্পদ সরিয়েছে বিদেশে। প্রশাসনের সর্বত্র তথাকথিত শুদ্ধারের চাদরের নিচে অশুদ্ধাচারের চর্চা তথা সম্পদ আত্মসাতের সাধনায় প্রতিনিয়ত নিরত থেকেছে তারা। তাদের প্রভুত্বের পদতলে পিষ্ট হয়েছে প্রশাসনের ভেতরের ও প্রশাসনের বাইরের ক্ষমতাহীন মানুষেরা। আসলে একটি কাঠামোগত সহিংসতার অপ্রতিরোধ্য ও প্রবল আধিপত্য তারা গড়ে তোলতে সক্ষম হয়েছে সমগ্র সমাজসাংস্থিতিক পরিসরে, যা এখনও প্রবলাকারে বহাল আছে। এর বিরুদ্ধে জনগণের উত্থান সম্ভব না হলে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের পরিকল্পনা ধনীদের ধনসঞ্চয়ের প্রকল্পে পর্যবসিত হবে, অনিবার্যভাবে বার বার। সমাজের অধিপতি শ্রেণি ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা যারা বিগত দেড় দশক রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন ছিল তারা দেশটাকে মগের মুল্লুক বানিয়ে কেবল লুটপাট করেছে। দেশের উন্নতির কথা তাদের মাথায় ছিল না, উন্নয়ন পরিকল্পনা তারা সাজিয়েছে লুটপাট করার দুরভিসন্ধি মাথায় রেখে। প্রকৃতপ্রস্তাবে বিগত কয়েক দশক ব্যাপী নেওয়া সকল উন্নয়ন পরিকল্পনা অর্থআত্মসাৎ করার পরিকল্পনা ভিন্ন অন্য কীছুই ছিল না। যার ফলে বাংলাদেশে উন্নয়নকাজের খরচ গিয়ে ঠেকেছে অন্য কোনও দেশের তুলনায়, কেউ কেউ বলেন, ক্ষেত্রবিশেষে ১০ গুণেরও বেশি। যেমন তারা রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে একটা বালিশ দুতলায় তোলার পারিশ্রমিক ধরেছে ৫ হাজার টাকারও বেশি। স্বাভাবিক বুদ্ধির যে-কোনও মানুষ এই খরচকে প্রকৃতপক্ষে যা খরচ হওয়া উচিত তার চেয়ে পাঁচ হাজার গুণ বেশি বলেই ধরে নেবেন। জানা যায়, সুনামগঞ্জের হাসপাতালে এক বছরে ফটোস্ট্যাটের বিল উঠেছে লক্ষাধিক টাকা। আর এইসব অবিশ্বাস্যরকমের ভুয়া বিলকে অনুমোদন করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। আর বেশি কীছু বলতে চাই না। বলতে শুরু করলে মহাভারত তৈরি হবে বটে, কিন্তু বোধ করি সেটা কোনও কাজের কাজ হবে না। কেবল বলি, এই শোষণের প্রক্রিয়া, এই নির্যাতনের সূতিকাগারÑ এই কাঠামোগত সহিংসতাকে রুখে দিতে হবে। তা না হলে শোষণ ও নির্যাতনের নিয়তিকে মেনে নিয়ে কাপুরুষের মতো শয়তান শোষকশ্রেণির পদতলে পিষ্ট হতে হতে বেঁচে থাকতে হবে। পরিশেষে কথা একটাই, জাগো মানুষ, এই শোষণ-নির্যাতনের সূতিকাগার গুঁড়িয়ে দাও। সকল সামাজিক, রাজনীতিক ও আর্থনীতিক বৈষম্যের নিরসন করো।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স